মানব সেবা অভিযান এর সেবা সমূহ
৪. বঙ্গবন্ধু উচ্চশিক্ষা বৃত্তি প্রদান

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্মরণে এই সংস্থা ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের অক্টোবর মাস হতে বঙ্গবন্ধু উচ্চশিক্ষা বৃত্তি প্রদান শুরু করে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নরত পাঁচ জন অস্বচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীকে প্রতিমাসে জনপ্রতি ৩,০০০/- করে মোট ১৫,০০০/- টাকা বিতরন করা হয় । জুন ২০২২ পর্যন্ত মোট ১,৩৫,০০০/-টাকা ‘বঙ্গবন্ধু উচ্চশিক্ষা বৃত্তি’ প্রদান করা হয়েছে। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে এই খাতে যথানিয়মে প্রদান করা হবে । এটা মানবসেবা অভিযানের চলমান প্রক্রিয়া ।
১৩. করোনা ভাইরাস মহামারিতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তা প্রদান

করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্থ ৬০৬জন দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য বিভিন্ন সহৃদয় ব্যক্তিবর্গের নিকট হতে ১,৭৬,০২৫/- টাকা, রাজশাহী সদর আসনের মাননীয় সাংসদ জনাব ফজলে হোসেন বাদশা ১,০০,০০০/-টাকা এবং সংস্থার নিজেস্ব তহবিল হতে ১,২৫,০০০/-টাকা ,সর্বসাকুল্যে ৪,০১,০২৫/- টাকার সহায়তা প্রদান করা করা হয়। ২০২১-২০২২ অর্থ বছে র সংস্থার নিজেস্ব তহবিল হতে ২৩৪ জনকে ১,৬৪,০০০/- টাকার সহায়তা প্রদান করা হয়। জুন ২০২২ পর্যন্ত সর্বমোট ৫,৬৫,০২৫/- টাকার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
১৪. গাছ বিতরণ কর্মসূচি

স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম শাহাদাত বার্ষিকী স্মরণে ও জাতীয় শোক দিবস ২০২১ পালন উপলক্ষ্যে মানবসেবা অভিযান সংস্থার সকল শাখা অফিসে গাছের চারা বিতরণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়। ইতোমধ্যে সংস্থার আলীগঞ্জ, দারুশা, দামকুড়া, নওদাপাড়া, নওহাটা, ফরিদপুর, রাজাবাড়ী ও ভাঙ্গুড়া শাখায় পর্যায়ক্রমে গাছ বিতরণ কর্মসূচি সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয়েছে। জনপ্রতি ১টি করে ফলদ ও ১টি করে বনজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৫০০টি পরিবারের মধ্যে ৫০,৩০০/- টাকার গাছ বিতরণ করা হয়েছে।
শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি

সংস্থার বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমের মধ্যে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়। সুখী ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তোলার অন্যতম মাধ্যম হলো মানসম্মত শিক্ষা। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের ভাল-মন্দ বোধের সৃষ্টি হয়। কেবল শিক্ষিত জাতিই পারে সমাজ থেকে দারিদ্র দূর করে সুখী সমাজ গঠন করতে। আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত এবং পিছিয়ে পড়া পরিবারের সন্তানদের শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই আমাদের সংস্থা জন্মলগ্ন থেকে দরিদ্র ও হতদরিদ্র সদস্যদের সন্তানদের শিক্ষা সহায়তা প্রদান করে থাকে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা উপকরণ ক্রয়, S.S.C ও H.S.C পরীক্ষার ফরম পূরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৩৩ জনকে ১,৩৩,০০০/- টাকা এবং সংস্থার শুরু হতে এ পর্যন্ত ১৪০৯ জন শিক্ষার্থীকে সর্বমোট ১৩,৫৭,৫৯৬/- টাকার শিক্ষা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি

যে সমস্ত দুস্থ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীগণ বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যেও তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের জন্য আমাদের এই উদ্দ্যোগ। আমরা জানি এদের পক্ষে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর। একেতো চলাফেরায় সমস্যা, তার উপর অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। এই ভাবনা থেকেই আমাদের সংস্থা ২০১২-১৩ অর্থবছর হতে দুস্থ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পাশে দাড়ানোর জন্য সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সহায়তার মাধ্যমে এপর্যন্ত১৩১ জন শিক্ষার্থীকে ৯৪,০০০/- টাকা প্রদান করা হয়। সংস্থা হতে এ পর্যন্ত ১৩১ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে ২,৬২,০০০/- টাকার সহায়তা প্রদান করা হয়।
চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদান কর্মসূচি

সুস্বাস্থ্য সুখী জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ। শিক্ষা সহায়তার পরেই এই সংস্থা থেকে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। দরিদ্র মানুষের জন্য ঔষধ ক্রয়, বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল টেষ্ট, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ফিস, আলট্রাসনোগ্রাফি, অপারেশন ইত্যাদির জন্য এই সংস্থা থেকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়ে থাকে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ১০৮ জনকে ৩,২৯,০০০/- টাকা এবং এ পর্যন্ত ৪৫০ জন ব্যক্তিকে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সহায়তা বাবদ সর্বমোট ১১,৭৭,০১০/- টাকা প্রদান করা হয়।
বিনামূল্যে সেলাই মেশিন বিতরণ কর্মসূচি

অনেক সময় দেখা যায় মহিলারা বিধবা হয়ে অথবা স্বামীর দ্বারা নির্যাতিত ও তালাকপ্রাপ্ত হয়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটায়, কখনও বা দরিদ্র বাবার সংসারে আশ্রয় নেয়। অসহায় বাবা দুমুঠো খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খায়, তার উপরে অসহায় মেয়ের বাড়তি চাপ। মানব সেবা অভিযান এই সকল দুঃস্থ মহিলাদের কর্মসংস্থানের কথা চিন্তা করে ২০১৬ সাল হতে সেলাই মেশিন প্রদান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন সহৃদয় ব্যক্তিবর্গের সাহায্য এবং সেবা ফান্ডের অর্থ দিয়ে এই কর্মসূচি পরিচালিত হয়। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৩টি সেলাই মেশিন এবং এ পর্যন্ত মোট ৪৮টি সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়েছে। আগামীতে এই কর্মসূচি বৃদ্ধির পরিকল্পনা আছে, যাতে পিছিয়ে পড়া অসহায় মেয়েরা কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেদের দক্ষতায় সমাজের সকল বাধা অতিক্রম করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।
বিনামূল্যে হুইল চেয়ার প্রদান কর্মসূচি

একাকী চলাচলে অক্ষম দরিদ্র ও অসহায় শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সহায়তার জন্য বিনামূল্যে হুইল চেয়ার প্রদান কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় এবং সংস্থার সেবা ফান্ডের অর্থ দিয়ে ২০১৬ সাল হতে এই কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ১৬টি হুইল চেয়ার এবং এ পর্যন্ত মোট ৬৫ টি হুইল চেয়ার প্রদান করা হয়েছে। আগামীতে এই কর্মসূচি বৃদ্ধির পরিকল্পনা আছে।
মাসিক মেমোরিয়াল শিক্ষা বৃত্তি

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে দশজন অস্বচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীকে মাসে ১০০০/- টাকা করে মেমোরিয়াল শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা শুরু হয়। পরবর্তী পর্যায়ে শিক্ষার্থীর ধরণ ও শ্রেণীভেদে এই মাসিক বৃত্তির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। মেডিকেল কলেজ, প্রকৌশল ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন কলেজে মাস্টার্স, স্নাতক, দ্বাদশ ও একাদশ শ্রেণী, কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্কুল পর্যায়ে অধ্যয়নরত দুঃস্থ মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাসিক মেমোরিয়াল শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হয়। বর্তমানে শিক্ষার্থী ভেদে মাসে ১,০০০/- টাকা হতে ৩,০০০/- টাকা করে এই বৃত্তি প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য যে আমেরিকা প্রবাসী ডা: মো: আসিফ ইকবাল-এর আর্থিক সহায়তায় তাঁর পিতা মরহুম আবুল কাশেমের নামে ‘আবুল কাশেম মেমোরিয়াল বৃত্তি’ ফান্ড হতে প্রথম এই বৃত্তি প্রদান করা শুরু হয়। পরবর্তী কালে রাজশাহী জেলার অন্যতম বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ নজমুল হক সরকার-এর সন্তানসহ আরো অনেকে তাদের প্রিয়জনের স্মরনে মোমোরিয়াল বৃত্তি তহবিলের মাধ্যমে মাসিক বৃত্তি প্রদান শুরু করেন। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৮ জনকে ২,১৯,০০০/- টাকা এবং এ পর্যন্ত ২৫ জন শিক্ষার্থীকে সর্বমোট ১১,৬৪,৫০০/- টাকা মাসিক মেমোরিয়াল শিক্ষা বৃত্তি বাবদ প্রদান করা হয়েছে।
এককালিন মেমোরিয়াল শিক্ষা বৃত্তি

২০১২-২০১৩ অর্থ বছর থেকে আমাদের সংস্থা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অস্বচ্ছল ও পিছিয়ে পড়া সদস্যগণের যে সকল সন্তানেরা বিভিন্ন প্রতিকূলতার মাঝেও তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন এবং তুলনামূলকভাবে ভাল ফলাফল করছেন তাদের জন্য আমাদের এই কর্মসূচি। এই ধরণের পরিবারের শিক্ষার্থীদের তৃণমূল থেকে খুঁজে বের করে শিক্ষার পথ সুগম করার জন্য এককালীন মেমোরিয়াল শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হয়। বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় এই কর্মসূচি চালু রয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ২২ জনকে ১,৮৬,০০০/- টাকা এবং এ পর্যন্ত ১২২ জন শিক্ষার্থীকে সর্বমোট ৪,৮৮,৫০০/- টাকা মেমোরিয়াল বৃত্তি ফান্ড হতে এককালীন বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।
৭. অসহায় ও দুঃস্থ ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা প্রদান কর্মসূচী

আমাদের সমাজে দেখা যায় কিছু দুঃস্থ ও অসহায় ব্যাক্তি আছেন যারা অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে খেয়ে-না খেয়ে দিন পার করছেন। অসুখে-বিসুখে চরম কষ্টের মধ্যে তাঁদের দিন পার হচ্ছে। যাদের উপযুক্ত ছেলে-মেয়ে নাই তাদের ক্ষেত্রে কষ্টের মাত্রা আরো বেশী। আমাদের প্রত্যেকের উচিত এদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়ানো। এই অনুভুতি থেকে আমাদের সংস্থা সমাজের দুঃস্থ ও অসহায় ব্যক্তিদের সাহায্যের জন্য ২০১২-২০১৩ সাল থেকে ‘অসহায় ও দুঃস্থ ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা’ প্রদান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে এই তহবিল হতে ২১ জনকে ১,৫৯,০০০/- সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। জুন’২০২২ পর্যন্ত ২৭ জন দুঃস্থ এবং অসহায় ব্যক্তির মাঝে ত্রৈমাসিক ১৫০০/- টাকা করে মোট ৮,২৬,৪৭৫/- টাকা প্রদান করা হয়েছে। বিভিন্ন দানশীল ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় ভবিষ্যতে এই কর্মসূচি আরো সম্প্রসারণ করা হবে।
দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিক সাহায্য প্রদান কর্মসূচি

মানব সেবা অভিযান ২০১২ সালে দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ১০০০/- টাকা করে সম্মানি ভাতা প্রদান করা শুরু করে। বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ভাতা বৃদ্ধি করার প্রেক্ষিতে সংস্থার এই ভাতা প্রদান কর্মসূচি জুলাই ২০১৬ হতে বন্ধ করা হয়েছে। তবে সম্মানিত অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রয়োজনে সংস্থা থেকে অন্যান্য সহায়তা প্রদান অব্যাহত আছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ২৪,০০০/- টাকা এবং এ পর্যন্ত সম্মানিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা ও সহায়তা বাবদ জুন ২০২২ পর্যন্ত সর্বমোট ২,৬২,০০০/- টাকা প্রদান করা হয়েছে।
৮. যাকাত ফান্ড

আমাদের দেশে অনেক হতদরিদ্র পরিবার আছে যাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হঠাৎ কোন দুর্ঘটনায় কর্মহীন অথবা মারা যাবার ফলে তার পরিবার এক চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়। এই সমস্ত পরিবার উপযুক্ত পরিবেশ, শিক্ষা, পুণর্বাসন এবং কর্মসংস্থানের অভাবে দারিদ্রের চরম সীমার মধ্যে বসবাস করে। তাদের আর্থিক অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে তারা নিজেদের চিকিৎসার স্বল্পতম ব্যয়ভারও বহন করতে পারেন না। এছাড়াও চিকিৎসা শেষে অনেক রোগীই সম্পূর্ণ শারীরিক সক্ষমতা ফিরে পায় না, ফলে সেই পরিবারটি একেবারে অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়ে যায়। কর্ম এলাকার মধ্যে এই ধরণের যে সকল অসহায় পরিবার আছে তাদের সহযোগীতার জন্য মানব সেবা অভিযান ‘যাকাত তহবিল’ গঠন করেছে। দুঃস্থ মহিলাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পুঁজি প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা আমাদের এই কার্যক্রমের অন্যতম লক্ষ্য। এই তহবিলের অর্থ দিয়ে গরীব সদস্যদের প্রয়োজনে সেলাই মেশিন, হুইল চেয়ার ইত্যাদিও প্রদান করা হয়। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ১,১০,৮৫০/- টাকা এবং জুন ২০২২ পর্যন্ত ৩,৭৮,৪৪৭/-টাকার বিভিন্ন উপকরণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
৯. বিবাহ ফান্ড

গরীব, অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মেয়েদের বিয়েতে সহায়তা প্রদানের জন্য দানশীল ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে এই ফান্ড গঠন করা হয়েছে৷ ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত এই ফান্ড হতে ১০ জনকে ৩১,৫০০/- টাকা প্রদান করা হয়েছে৷
১০. অসহায় ও দুস্থ পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান কর্মসূচি

দরিদ্র পরিবারের মেধাবি শিক্ষার্থীদের লেখাপাড়া, আত্মকর্মসংস্থান এবং নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে সংস্থা ২০১৬-১৭ অর্থ বছর হতে অসহায় ও দুস্থ পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৯টি পরিবারে এবং এ পর্যন্ত সর্বমোট ৪৫ টি পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে।
১২. বৃদ্ধনিবাস এবং দাতব্য চিকিৎসালয়

বৃদ্ধনিবাস এবং দাতব্য চিকিৎসালয় প্রকল্পটি গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র ও অবহেলিত জনগণের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য হাতে নেয়া হয়েছে। আমাদের সমাজের অসহায় মানুষজন বেকারত্ব, ক্ষুধা, অপুষ্টির সাথে জীবনযাপন করে নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। বিশেষভাবে গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসা সুবিধা খুবই কম বলে বিনা চিকিৎসায় প্রতি বছর অনেক লোক কষ্ট পান। এই সকল বাস্তবতা বিবেচনা করে আমাদের সংস্থা এই উদ্যোগটি হাতে নিয়েছে। এলক্ষ্যে জুন ২০২২ পর্যন্ত ৩৫,১২,৭৯১/- টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে।
১. ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি

বাইরের কোন অনুদান ছাড়াই সদস্যদের সঞ্চয়, সংস্থার উদ্বৃত্ত তহবিল, ব্যক্তি পর্যায়ে স্বল্পমেয়াদী ঋণ এবং ব্যাংক ঋণ নিয়ে এই সংস্থা ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হলো দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ব্যবসা সম্প্রসারণ, হতদরিদ্র মানুষের উন্নয়ন ঘটানো, প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকদের ঋণ সহায়তা প্রদান করা এবং সর্বোপরী ক্ষমতায়নের মাধ্যমে নারী সমাজের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। জুন ২০১৮ পর্যন্ত কর্মএলাকায় ৮টি শাখা অফিসের মাধ্যমে প্রায় ১১৬৮১ জন সদস্যকে আর্থিক সহযোগীতার পাশাপাশি বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হয়েছে। ক্ষুদৃঋণ কার্যক্রমের আওতায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৩৭,৪৫,৪৮,০০০/- টাকা। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা।
২. সূদমুক্ত শিক্ষা ঋণ

একাদশ থেকে উচ্চতর শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান থেকে বৃত্তি এবং শিক্ষা ঋণ প্রদান করা হয়। কিন্তু নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এরূপ কোন সহায়তা নাই। এইজন্যই বিশেষ করে নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাবার জন্য এই সংস্থায় ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছর থেকে সূদমুক্ত শিক্ষা ঋণ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৫১ জনকে ৩,০৬,০০০/- টাকা এবং এ পর্যন্ত ১০৩৯ জন শিক্ষার্থীকে সর্বমোট ৬২,৩২,০০০/- টাকা সুদমুক্ত শিক্ষা ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
৩. দুস্থ প্রতিবন্ধীদের আয় বৃদ্ধির জন্য সূদমুক্ত ঋণ

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণ আমাদের দেশ তথা সমাজের বোঝা নয় এবং একটু সহযোগীতা পেলে তাঁরাও আর দশ জনের মত স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে-এ সত্যকে সামনে রেখেই সংস্থা নিজস্ব অর্থায়নে ২০০৯ সাল থেকে সূদমুক্ত প্রতিবন্ধী ঋণ সহায়তা কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে। কর্মএলাকার দুঃস্থ প্রতিবন্ধী ভাই-বোনেরা সূদমুক্ত ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে আয়বৃদ্ধিমূলক কাজে সম্পৃক্ত হয়ে মর্যাদার সাথে পরিবারে অবদান রাখছেন।ফলে পরিবারে ও সমাজে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৯ জনকে ৪৫,০০০/- টাকা এবং এ পর্যন্ত ২৪৬ জন দুস্থ প্রতিবন্ধী সদস্যের মাঝে ১১,৩০,০০০/- টাকা সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিবন্ধীগণ পরিবারের বোঝা না হয়ে যেন নিজেদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে পারেন এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমাদের এই প্রচেষ্টা।